শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৯

অন্ধ নারীরাই শনাক্ত করছেন স্তন ক্যান্সার



স্বাস্থ্য ডেস্ক: ১২ অক্টোবর’ ১৯: কোনো নারীর স্তন ক্যান্সার হয়েছে কি না, কলম্বিয়াতে সেটা অন্ধ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা পরীক্ষা করে দেখছেন। এ প্রকল্পের নাম দেওয়া হযেছে ‘যে হাত জীবন বাঁচাতে পারে’।
অন্ধ ব্যক্তির হাতের স্পর্শ অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ার কারণে এই ক্যান্সার শনাক্ত করার কাজে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সারা বিশ্বে নারীরা এ ক্যান্সারেই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এতে অনেকের মৃত্যুও হচ্ছে। স্তন ক্যান্সার থেকে জীবন রক্ষার একটি উপায় হলো যত শীঘ্র সম্ভব এটিকে শনাক্ত করা। আর এ কাজেই কলম্বিয়াতে কাজে লাগানো হয়েছে অন্ধ ব্যক্তিদের।
তাঁদেরই একজন লিইডি গার্সিয়া বলছেন, ‘আমার কাছে হাতই হলো আমার চোখ। এই হাত দুটি দিয়েই আমি সারা বিশ্বকে অনুভব করতে পারি। বর্তমানে আমি যা কিছু করছি, এই হাত দুটি ছাড়া সেসব করা অসম্ভব ছিল।’ তিনি বলছেন, ‘আমার আঙুল, আঙুলের মাথা—এসব দিয়ে স্পর্শের যে অনুভূতি, সেটা দিয়ে আমি অন্য নারীদের সহায়তা করতে পারছি।’
লিইডি গার্সিয়া বলেন, ‘স্তনের টিস্যুতে কোনো ধরনের পরিবর্তন বা অস্বাভাবিক কিছু থাকলে সেটি আমি আমার স্পর্শ দিয়ে চিহ্নিত করতে পারি। বুঝতে পারি স্তনে অস্বাভাবিক কোনো লাম্প বা মাংসপিণ্ড আছে কি না।’
অন্ধদের দিয়ে স্তন পরীক্ষার এই উপায়টি উদ্ভাবন করেছেন জার্মান গাইনোকোলজিস্ট ড. ফ্রাংক হোফম্যান। তিনি বলছেন, ‘স্তন পরীক্ষা করতে গিয়ে আমরা নতুন একটি পদ্ধতি ব্যবহার করছি। এটি উদ্ভাবন করা হয়েছে জার্মানিতে। এই পদ্ধতিতে স্তনের পুরো এলাকায় আঠাযুক্ত টেপ লাগিয়ে প্রতি ইঞ্চি পরীক্ষা করে দেখা হয়। এর মাধ্যমে স্তনের সামান্য কোনো অংশও যাতে পরীক্ষা থেকে বাদ পড়ে না যায়, সেটা নিশ্চিত করা হয়। যদি অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়, তাহলে তাকে ডাক্তারের কাছে পাঠানো হয়। ওই চিকিৎসকই ঠিক করেন এরপর তাকে কী ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হবে।’
একটি হাসপাতালের চিকিৎসক লুইস আলবার্তো ওলাভ বলছেন, ‘একজন প্রশিক্ষিত ডাক্তার স্তনের লাম্প এক সেন্টিমিটারের চেয়ে বড় হলে সেটা ধরতে পারেন। কিন্তু আমরা দেখেছি যে একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি এর চেয়ে ছোট আকারের মাংসের দলাও শনাক্ত করতে পারেন। এ রকম ক্ষুদ্রাকৃতির লাম্প ধরতে পারাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এতেই বেশি সময় লেগে যায়।’
সূত্র : বিবিসি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন