শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৯

প্রশংসায় ভাসছেন গ্রামের মানুষদের জন্য বাংলাদেশে আসা মার্কিন দম্পতি


স্বাস্থ্য ডেস্ক: ০১ ডিসেম্বর’১৯: ডাক্তার ভাই এড্রিক বেকার টাঙ্গাইলের মধুপুরের কালিয়াকুড়িতে গরিবের জন্য হাসপাতাল গড়ে তুলেছিলেন। বেকার মারা যাওয়ার পর দায়িত্ব নিয়েছেন আমেরিকান দম্পত্তি জেসন-মারিন্ডি।
শুক্রবার বিটিভিতে প্রচারিত হানিফ সংকেতের ইত্যাদি অনুষ্ঠানে এই দম্পত্তিকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরপরই তা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
দরিদ্র মানুষদের জন্য নিউজিল্যান্ডের চিকিৎসক এড্রিক বেকারের প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালের হাল ধরে প্রশংসায় ভাসছেন আমেরিকান এই দম্পত্তি।
ইত্যাদির ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, টানা ৩২ বছর গ্রামের দরিদ্র মানুষদের চিকিৎসা দেয়ার পর মারা যান ডাক্তার ভাই হিসেবে পরিচিত ডাক্তার এড্রিক বেকার।
দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে অনেকেই চেয়েছিলেন উনাকে ঢাকাতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দিতে। তিনি ঢাকা যাননি। তার তৈরি করা হাসপাতালেই তিনি ২০১৫ সালে মারা যান।
মৃত্যুর আগে তিনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশি কোনো ডাক্তার যেন গ্রামে এসে তার প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালের হাল ধরেন। কিন্তু এ দেশের একজন ডাক্তারও তার সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি।
তবে দেশের কেউ সাড়া না দিলেও এড্রিক বেকারের আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলেন আমেরিকার এক হৃদয়বান দম্পত্তি জেসন ও মারিন্ডি।
ডা. এড্রিক বেকার বেঁচে থাকার সময় কালিয়াকুড়ির এই হাসপাতালটি পরিদর্শন করেছিলেন। পরবর্তীতে ডাক্তার ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে জেসন অস্থির হয়ে উঠেন। কিন্তু তখন নিজের প্রশিক্ষণ ও ছেলেমেয়েরা ছোট থাকার কারণে জেসন বাংলাদেশে আসতে পারেননি।
অবশেষে সবকিছু গুছিয়ে সম্পদ আর সুখের মোহ ত্যাগ করে ২০১৮ সালে পুরো পরিবার নিয়ে আমেরিকা ছেড়ে স্থায়ীভাবে চলে আসেন মধুপুরে। জেসন হয়ে উঠেন নতুন ডাক্তার ভাই আর মারিন্ডি হয়ে উঠেন ডাক্তার বিবি।
বাংলাদেশে আসার সময় নিজেদের সন্তানদেরও সঙ্গে করে নিয়ে আসেন তারা। ইতিমধ্যে ভর্তি করে দিয়েছেন গ্রামেরই স্কুলে। তারা গ্রামের শিশুদের সঙ্গে লেখাপড়া ও খেলাধূলা করে।
অবসরে ডাক্তার জেসিনও লুঙ্গি পরে ঘুরে বেড়ান। তাদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশি ফল ও খাবার। জেসন-মারিন্ডি বাংলায় কথা বলতে পারেন। সন্তানদেরও বাংলা ভাষা শেখাচ্ছেন।
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন এই দম্পত্তি।
ইত্যাদির মাধ্যমে বাংলাদেশি ডাক্তারদের গ্রামে গিয়ে দরিদ্র মানুষের সেবার আহ্বান জানিয়েছেন জেসন-মারিন্ডি।
এদিকে প্রতিবেদনটি ভাইরাল হওয়ার পর জেসন-মারিন্ডি দম্পত্তির প্রশংসা করেছেন নেটিজেনরা। সুদূর আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এসে দরিদ্র মানুষের সেবা করে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তারা তা নজিরবিহীন বলেও মনে করেছেন অনেকেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন